চলচ্চিত্রের কাহিনিকেও হার মানিয়েছে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় একটি পরিবারের পুনর্মিলনের গল্প। দীর্ঘ ২২ বছর পর আমেনা নামের এক নারীকে ফিরে পেয়েছেন তার স্বজনরা। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে নেপাল থেকে দেশে ফিরে জন্মভূমির মাটি স্পর্শ করেন তিনি। তাকে দেখতে উপজেলার ছোটচাপড়া গ্রামের বাড়িতে ভিড় করেন অনেকে।
মানসিক ভারসাম্যহীন আমেনা ৫৬ বছর বয়সে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন। স্বজনরা ধরেই নিয়েছিলেন তিনি মারা গেছেন। তিন মাস আগে নেপালের সুনসারি এলাকায় তার সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় তার পরিবারের খোঁজ মেলে। পরে নেপালে বাংলাদেশের দূতাবাস তাকে উদ্ধার করে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারি খরচে সোমবার রাতে নেপাল থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরে এসেছেন আমেনা।
আমেনার ছেলে আমজাদ হোসেন বলেন, আমার মা আগে থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। ২২ বছর আগে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন। তিন মাস আগে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানতে পারি, নেপালে মাকে পাওয়া গেছে। এরপর তাকে সরকারি খরচে দেশে ফেরানোর জন্য আবেদন করি। নেপালে বাংলাদেশের দূতাবাস তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। মাকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি। বাকি জীবনটা মা আমার কাছেই থাকবেন।
আমেনার বোন জরিনা খাতুন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমেনা পাগলের মতো আবোল তাবোল কথা বলতেন। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন পর সে বাড়িতে ফিরে আসায় আমরা অনেক খুশি হয়েছি।
কীভাবে বাড়ি থেকে নেপালের সুনসারিতে পৌঁছান তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না আমেনা খাতুন। তারপরও তার অসংলগ্ন কথাবার্তায় যতটুকু জানা যায় তা হলো, তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে চট্টগ্রাম হয়ে ভারতে পৌঁছান। তারপর দুর্গাপূজার সময় ভারত থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজনের সঙ্গে নেপালের সুনসারি জেলার ইনারোয়া শহরে পৌঁছে বাসাবাড়ি ও হোটেলে কাজ করতেন।
বার্ধক্যের কারণে তিনি কাজ করতে না পেরে রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে অবস্থান করছিলেন। পরে ইনারোয়া পৌরসভার কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে সুনসারি জেলা প্রশাসনের হেফাজতে রাখেন। দেশে ফিরে স্বজনদের পেয়ে অনেক খুশি হয়েছেন তিনি।