দীর্ঘ ৫৪৪ দিন ছিলো ছাত্র-ছাত্রাীদের ঘরবন্দী জীবন। বিদ্যালয়গুলোও ছিলো নীরব। কোন কোনটায় আবার ভাব ছিলো ভূতোড়ে। ভরসা ছিলো কেবল মোবাইল ফোন। আর এ ভাবেই শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে কেটে যায় ৫৪৪ দিন বা প্রায় ১৮ মাস। কিন্তু এবার প্রাণ ফিরল স্কুলে। কোন কোনটাতে আবার বাজলো বাদ্যযন্ত্র।
কোন কোন প্রতিষ্টানে শিক্ষার্থীদের বরন করে নিতে আলাদা ভাবে গেটও নির্মাণ করতে দেখা গেছে। এ যেন ঈদের দিনের মতো। তেমনি ব্যতিক্রমী ভাবে আয়োজন করে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজ নরসিংপুর। রোববার সকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদ্যালয় খোলার মধ্যদিয়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের বরন করে নেন শিক্ষকরা।
সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায় সাজ সাজ পরিবেশ। ভেতরে ভয়ছে আনন্দের ছোঁয়া। আর সারিবদ্ধ ভাবে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে দাঁড়িয়ে আছে শিক্ষার্থীরা। সবার শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে প্রবেশ করানো হচ্ছে শ্রেণিকক্ষে।
এসময় স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিন পর স্কুলে এসে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। সেই সাথে শিক্ষিকদের কাছে পেয়েও খুশি আমরা।
এসময় বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক বিপ্লব কান্তি দাশ বলেন, করোনাভাইরাস থেকে বেঁচে থাকার লক্ষে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বাড়িতে কম খরচে হ্যান্ড স্যনিটাইজার বানানোর কৌশল আমরা আজ শিখিয়ে দেই। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওয়ারিছ আলী বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। ডিজিটাল থার্মোমিটার দ্বারা তাদের তাপমাত্রা মাপা হয়। তাছাড়াও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির লোক এসেও মনিটরিং করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দদের শুভেচ্ছা জানায়। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনযোগ বাড়ানোর জন্য করেনাকালীন দৈনিক ক্লাস রুটিন ও আমরা বুঝিয়ে দেই।
এদিকে ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের ব্যাপারে
ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত
প্রধান শিক্ষক সানুর আলী বলেন, দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবে। তাই তাদের মনে উৎসব আমেজে যেন ঈদ বয়ে গেছে। সেই লক্ষে আমরা বিভিন্ন ভাবে তাদের অভ্যর্থনা জানিয়েছি। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুমে ডেকেছি। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা যেন উৎফুল্ল থাকে, শারীরিক ও মানসিক ভাবে যেন তারা সুস্থ থাকে সে ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবো পাঠদানে।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমজাদ হোসাইন, আবু শহিদ, ছানোয়ার আহমদসহ উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ শ্রেনীকক্ষগুলোতে স্বাস্থ্য বিধি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসরণ করে বক্তব্য দেন।
তবে স্কুলে প্রাণোচ্ছল শুধু এখানেই না। দোয়ারাবাজার উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯০ শতাংশের উপর শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে শিক্ষাঙ্গন সরব হয়ে উঠতে দেখাগেছে।।